Dec 13, 2007

সমাবর্তন-৪: স্নাতক সম্মানধারী!

৫ তারিখ খুব সকালেই গাউন আর আইডি কার্ডের জন্য ভার্সিটি গিয়ে আমরা হাজির। সোহাগ আর ফেকুকে এত সকালে ঘুম থেকে তোলা যাবে প্রথমে কেউ আশা করি নাই। অফিস জীবন সবাইকেই কিছু পরিবর্তন করেছে। ৮ টার মধ্যে সবাই ঘুম থেকে উঠে পড়ে!!

লাইনে দাড়ানো মাত্রই ফটো-সেশন শুরু হল। যথারীতি ধাক্কা-ধাক্কি করে লাইনে সবাই নিজের অবস্থান

পুনঃপুনঃপ্রতিষ্ঠিত করল। গাউন জোগাড় হবার পরে তানভীর স্যারের দর্শন নিতে গেলাম। দর্শন শেষে নিচে নেমে জাফর স্যারের সাথে ফটো-সেশন। সাথে টুকরো, টুকরো আড্ডা তো চলছেই। লাঞ্চে ১৫-১৬ জন মিলে বৈশাখীতে খেলাম। এরপর দুপুরে বিরক্তিকর rally প্র্যাক্টিস করালো। দিনটাও খুব দ্রুত কেটে গেলো।

পরদিন কনভোকেশন। দেড় ঘন্টা rally লাইনে দাঁড়িয়ে মেজবা rally sort algorithm আবিষ্কার করে ফেললো। এরপর দুই ঘন্টা চেয়ারে বসে ঝিমোবার পরে রাষ্ট্রপতি মহোদয় আসলেন। আমরা গ্রাজুয়েট ঘোষিত হলাম। এরপর শুধু ক্যামেরার শাটারের শব্দ মনে পড়ছে।

শেষ বিকেলে সিনিয়রদের সাথে আড্ডাটা অনেকেরই মনে থাকবে। জহির স্যার, তৌফিক ভাইদের মত সিনিয়ররা আড্ডায় ছিলেন। বিভিন্ন প্রসঙ্গে কয়েকজন স্মৃতিচারণ করলেন। দিদার ভাইয়ের জন্মদিন ছিল এদিন।

*****************************************************

অপুর জন্যে আমরা :

সমীর বিশ্বাস অপু। সি. এস.ই পরিবারের ২০০১ ব্যাচের সদস্য। শিকড়ের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। একজন ভালো ক্রিকেট খেলোয়াড়ও। দূরারোগ্য ব্যধি প্লাষ্টিক অ্যানিমিয়াতে আক্রান্ত। বাঁচতে হলে প্রয়োজন মাত্র ২০ লক্ষ টাকা।

দায়িত্ববোধ জীবনের খুব বড় একটি ব্যাপার। অপু আমাদেরই ছোট ভাই, আমাদের আপন পরিবারএই অনুভূতিই আমাদের জেগে থাকা উচিত।

মাত্র ২০ লক্ষ টাকার জন্যে অপুর জীবনের চাকা থেমে যাবে? পরিবারবোধ পরাজিত হবে? অপুর হাত কি আমরা চির-অন্ধকার জগতের জন্যে ছেড়ে দিবো?

*******************************************************

কনভোকেশন রাতে আমরা ফেয়ারওয়েল পার্টিতে জড়ো হলাম চৌহাট্টা আল-হামাদান রেষ্টুরেন্টে। বিদায় ঘন্টা ক্ষীণ স্বরে বাজতে শুরু করেছে। অনেকের অফিস শনিবার! ছাত্রত্ব অনুভূতি ত্যাগ করে আবার কর্মস্থলে ঢুকতে হবে। বৃহস্পতিবার রাতেই তারা সিলেট ছেড়ে রওনা দিলো।

পরদিন ইউনিভার্সিটিতে সার্টিফিকেট তুলবার পরে বিশ্বদার সাথে দেখা। ডি-বিল্ডিং এর সামনে ভাবীকে নিয়ে চুপচাপ বসে আছে। সামনে যাবার পরেই বললেন, সুনামগঞ্জে যখনই আসি, ফেরত যাবার পথে রিক্সা করে ইউনিভার্সিটিতে একবার ঢুঁ মেরে যাই। গোল চত্বর থেকে এ-বিল্ডিং একবার রিক্সা দিয়ে ঘুরেই ভার্সিটি থেকে বের হয়ে পড়ি। রিক্সা থেকে নামি না। অথচ এইবার যেতে ইচ্ছা করছে না।

[আগামী কিস্তিতে সমাপ্য।]






অপুঃ আবার কোন একদিন ক্রিকেট খেলবে










3 টি মন্তব্য:

Himel Nag Rana বলেছেন...

জোশ হচ্ছে রুমন।আমার খুব লোভ হচ্ছে আমার কিছু কথা লিখতে। কিন্তু ভয় হচ্ছে কি লিখতে কি লিখি আর কে কিভাবে নেয়। লেখাটা শেষ কর। আমি ঈদের ছুটিতে লেখা শুরু করবো।

Anonymous বলেছেন...

রুমন ভাই,
আগে মাঝে মাঝে মনে হতো বুয়েট লাইফটা শেষ হয় না কেন???? এখন শেষপ্রান্তে এসে বার বার মনে হচ্ছে কেন এতো তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল কেন...ভালোই তো ছিলাম...

Anonymous বলেছেন...

নাগঃ
তোর লেখার অপেক্ষায়। একটু সেশন জটে পড়ে গেছি। অফিসে চাপ। তবে, এই লেখার বাকি পর্ব অবশ্যই শেষ করবো।

বিপ্রঃ
খুবই সত্য কথা লিখেছো।
আমরা অতীত, ভবিষ্যৎ নিয়ে মনে হয় খুব বেশী ব্যস্ত থাকি। তাই, যখন বর্তমান মুহূর্ত অতীত হয়, তখন মনে হতে থাকে আরও অনেক কিছুই করার বাকি ছিল...